[কবুতর পালন] যে ভাবে কবুতর পালান শুরু করবেন ও যে ভুল গুলো এরিয়ে চলবেন

যে ভাবে কবুতর পালান শুরু করবেন ও যে ভুল গুলো এরিয়ে চলবেন

নতুন কবুতর পালনকারী যে ভুলগুলো করবেন না !!
Pigeon-Breeder-Mistakes

আপনি কি কবুতর পোষার চিন্তাভাবনা করছেন ? আপনার কি বাণিজ্যিকভাবে কবুতর পোষার পরিকল্পনা আছে ? আপনি কি সখের বশে কবুতর পোষাতে চান? আপনার উত্তর যদি হ্যাঁ হয়, তাহলে এই পোস্ট টি আপনার জন্য। পোস্ট টি ভালোভাবে শেষ পর্যন্ত যত্ন সহকারে পড়ুন।

কবুতর পোষা মানুষের অতি প্রাচীন একটি সখ। সখ থেকে আস্তে আস্তে কবুতর পোষা বাণিজ্যিক রুপ ধারন করে। বাংলাদেশে ঢাকাই আনুমানিক ৪-৭ হাজার কবুতর পালনকারী আছে । সম্পূর্ণ দেশে কবুতর পালনকারীর সংখ্যা আনুমানিক ২৫-৩০ হাজার। কবুতর বেচা কেনার জন্য ঢাকার মধ্যেই গড়ে উডেছে কবুতরের হাঁট। বাংলাদেশের ঢাকার প্রধান কবুতরের হাট গুলো হল মিরপুর-১, গুলিস্তান, টঙ্গি ও জিঞ্জিরা, হাসনাবাদ।
যে ভাবে কবুতর পালান শুরু করবেন ও যে ভুল গুলো এরিয়ে চলবেন


কবুতর পোষতে গিয়ে আমরা না না রকম সমস্যার মধ্যে পড়ি। যারা নুতন কবুতর পালেন তাদের ক্ষেতে সমস্যা আরও ব্যাপক। নুতন কবুতর পালনকারী নিজেদের অজ্ঞতা ও অদক্ষতার কারনে সফলভাবে কবুতর পোষতে পারেন না। অনেকেই কবুতর পালা বন্ধ করে দেন। নতুনদের মধ্যে ৪০-৫০% কবুতর পালার কয়েকমাসের মধ্যেই কবুতর পালা বন্ধ করে দেন। যে ভুলগুলো নতুন কবুতর পালনকারী বেশি করেন থাকেন সেগুলো নিচে তুলে ধরা হল।
দামি কবুতর দিয়ে কবুতর পোষা শুরু করা। নতুনদের অনেকই শুরুতেই অনেক দামি জাতের কবুতর দিয়ে কবুতর পোষা শুরু করেন। এটা অনেকটাই একটা বোকামির কাজ। আপনি কোন রকম প্রাথমিক ধারনা, প্রশিক্ষন ছাড়া দামি জাতের কবুতর দিয়ে খামার শুরু করা মানে আপনি নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মারলেন। কিছুদিন পর বিভিন্ন রকমের সমসায় পড়বেন যার জন্য আপনি এই প্রাথমিক মুহূর্তে প্রস্তুত নন।

অসুস্থ ও রোগাক্রান্ত কবুতর হাঁট বা বাজার থেকে কিনে আনা । নতুনরা যেহেতু কবুতরের জাত বা রোগ সম্পর্কে অজ্ঞ তাই অনেকই অসুস্থ ও রোগাক্রান্ত কবুতর হাঁট বা বাজার থেকে কিনে নিয়ে আসেন। কিছুদিনের মধ্যে কবুতর নিজে মারা যায় ও অন্য কবুতরকে করে আক্রান্ত।
যে ভাবে কবুতর পালান শুরু করবেন ও যে ভুল গুলো এরিয়ে চলবেন


কবুতরের বসবাসের অনুকূল বাসস্থান বা খাঁচা সম্পর্কে ধারনা না থাকা। কবুতর একটি শান্ত, সুন্দর ও শখীন একটি পাখির জাত। এদের বাসস্থান সম্পর্কে কোন রকম ধারনা না নিয়ে নতুনদের অনেকই নিজের মত করে খোপ বা খাঁচা তৈরি করেন যেটা নাকি একদম ঠিক নয়।

পানি ও খাবার ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে অজ্ঞ থাকা। কবুতরকে নিয়মিত পানি ও খাবার দেয়া আবশ্যক। নতুনরা যেটা করেন প্রথমে কয়েকদিন অনেক যত্ন নিয়ে থাকেন পরে তেমন যত্ন নেন না যেমন নিয়মিত বিশুদ্ধ খাবার পানি না দেয়া, খাবার পানির পাত্র নিয়মিত পরিষ্কার না করা, যখন খুশি তখন খাবার দেয়া ইত্যাদি। অনেকই কবুতরকে সঠিক খাবার না দিয়ে অন্য খাবার দেন যেমন কবুতরকে ভাত বা চাল খাওয়ান, ভিছা, পচা খাবার কবুতরকে সরবরাহ করা।
কবুতরের রোগ ও তার মেডিসিন প্রয়োগে অজ্ঞতা। নতুনদের অনেকই কবুতরের রোগ ও তার মেডিসিন সম্পর্কে ভালোভাবে না জেনে কবুতরকে মেডিসিন প্রয়োগ করনে। অনেকই বাজার থেকে না বুঝে মেডিসিন কিনে এনে তা কবুতরকে প্রয়োগ করনে। যেমন আপনার কবুতরের আসলে হয়েছে ডাইরিয়া কিন্তু আপনি কবুতরকে দিছেন কৃমির মেডিসিন। অস্থুথ কবুতরকে অন্যদের থেকে আলাদা না করা। অনেকই অনলাইনের অনির্ভরযোগ্য বিভিন্ন উৎস থেকে কবুতরের রোগ ও মেডিসিন সম্পর্কে ধারনা নিচ্ছেন।

যে ভাবে কবুতর পালান শুরু করবেন ও যে ভুল গুলো এরিয়ে চলবেন


অজ্ঞতার কারনে কবুতর হারিয়ে যাওয়া বা কবুতর উড়ে যাওয়া। যারা নতুন কবুতর পালেন তাদের অনেকই জানেন না কবুতরের Homing Instinct সম্পর্কে। একটি কবুতর তার বাস্থথান কে সহজে ভুলে না। আপনি যদি নতুন কবুতরকে কিছুদিন খাঁচায় আটকিয়ে না রাখেন তাহলে কবুতরটি সুযোগ পেলেই তার অতীত বাস্থথান এ ফিরে যাবে। নতুনদের মাঝে কবুতর হারিয়ে যাওয়ার ঘটনা অনেক বেশি লক্ষ্য করা যায়।

সঠিক কবুতরের পেয়ার বা জোড়া না মিলানো । নতুনদের অনেকেই কবুতরের পেয়ার সম্পর্কে না জানার কারনে সঠিক পেয়ার করতে পারেন না। যেমন নর বা মাদি আকারের মধ্যে পাথক্য। দুর্বল কবুতরের সাথে পেয়ার করানো।

নর বা মাদি কবুতর সঠিক ভাবে চিনতে না পারা। নতুনদের অনেকই কবুতর নর না মাদি সঠিক ভাবে বুঝতে না পারার কারনে প্রতারনার শিকার হচ্ছেন। বাজার বা হাঁট থেকে আপনাকে বলা হল নর ও মাদি জোড়া মেলানো কিন্তু বাসায় এনে কয়েকমাস রাখার পরও ডিম দেবার কোন নাম নেই। পরে আবিস্কার করলেন যে দুটোই নর বা মাদি । পড়ুন কিভাবে বুঝবেন একটি কবুতর মাদি না নর কবুতর ?
কবুতর প্রাপ্তবয়স্ক বা Adult বুঝতে না পারা । কবুতর প্রাপ্তবয়স্ক বা Adult বুঝতে না পারার কারনে নতুনদের অনেকই প্রতারনার শিকার হচ্ছেন। জোড়া দিচ্ছেন ভুল কবুতরের সাথে। নষ্ট হচ্ছে আপনার টাকা ।
কবুতরের ডিম সম্পর্কে অজ্ঞতা। কবুতরের ডিম সম্পর্কে অজ্ঞ থাকার কারনে অনেকই খারাপ ডিম ভেবে ভাল ডিম ফেলে দিচ্ছেন। আবার ভাল ডিম ভেবে নষ্ট ডিমের উপর কবুতরকে তা দেওয়াচ্ছেন। ১৮ দিন হবার আগেই অজ্ঞতা বসত ডিম hatch করানোর চেষ্টা করছেন ইত্যাদি। পড়ুন কবুতরের ডিম নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ টিপস এবং তথ্য ।
নতুন কবুতর খামারি বা পালনকারী উপরের সব গুলো ভুল এড়িয়ে চলুন ও সবসময় অভিজ্ঞদের পরামর্শ নিন।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ